(বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম)
বাংলাদেশে অত্যাচারী শাসক শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনার জন্য দায়ী কে? দায়ীদের পরিনতি (আপডেট)
লেখক : মাওলানা মো: শিহাব. এম এ-ইসলামিক স্টাডিজ ( বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ)
বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার
প্রবর্তক ও স্বৈরশাসক শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ তারিখে সপরিবারে নিহত হওয়ার
পর তার উত্তরসুরীর কেহই ২৩ জুন ১৯৯৬ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়
আসতে পারে নি।মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ তারিখে প্রেসিডেন্ট পদে ক্ষমতায়
আসার পরে বাংলাদেশে এক
নায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘটিয়ে বহুদলীয় গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু
করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ থেকে দীর্ঘ ৬ বছর বিদেশে
পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন।মূলত তিনি খাল
কেটে কুমির আনেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেই বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তক
রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্তে
লিপ্ত হোন।শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার চক্রান্তে ৩০ মে ১৯৮১ তারিখে বহুদলীয় গনতন্ত্রের প্রবর্তক
রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়। এরপর শেখ হাসিনা
বাংলাদেশে তার পিতার মতোই স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষেই পার্টির কাজ গুছিয়ে তিনি ২৩ জুন ১৯৯৬ তারিখে
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হোন।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে তার পিতার হত্যার
প্রতিশোধ, কথিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার চক্রান্ত করতে থাকলেও সে মেয়াদে তিনি তা
সফল হতে পারে নি। এরপর বেগম খালেদা জিয়া ১০ অক্টোবর
২০০১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে
থাকলে শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন যে, রাষ্ট্রীয় যন্ত্রে তথা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান
বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি অর্থাৎ ডিসি, এসপি, ওসি, সচিব, বিচারক এবং বিভিন্ন
গোয়েন্দা সংস্থায় আওয়ামী চাকরিজীবি সংখ্যায় কম। তখন থেকেই শেখ হাসিনা ভারতীয় গোয়েন্দা
সংস্থা ‘‘র” এর পরামর্শে রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল
লীগের নেতা কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে তাদের বেতন ভাতা বাড়িয়ে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার
সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন। এরপর শেখ হাসিনা লগি বৈঠার তান্ডবলীলা দেখিয়ে তৎকালীন ফখর উদ্দিন
ও মঈন ইউ আহমেদের সাথে বিশেষ মেকানিজমে ৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে এবং ৫ জানুয়ারি ২০১৪
তারিখে ভোটার বিহীন এক পাতানো নির্বাচনে পূন:রায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হোন। ৬
জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
হয়ে তিনি এক জন সভায় ঘোষণা দিলেন যে, তিনি এখনো রাষ্ট্রীয় যন্ত্র বিএনপি মুক্ত করতে
পারেন নি। এরপর থেকে শুরু হয় বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ থেকে বিএনপি জোট সমর্থিত চাকরিজীবিদের
ছাঁটাইকরণ।৬
জানুয়ারি ২০০৯ তারিখ থেকে হাজার হাজার চাকরিজীবিদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। যা
এখনো অব্যাহত আছে। চাকরিচ্যুত চাকরিজীবিগণ আদালতে মামলা করতে গেলেও নেয়া হচ্ছে না
আওয়ামী বিচারকদের কারনে।
বর্তমানে পুলিশ বাহিতে আইজিপি থেকে
কনস্টবল পর্যন্ত সকলেই আওয়ামীলীগের সদস্য। আর শেখ হাসিনা টিকে আছেন এক মাত্র এই আওয়ামী
প্রশাসনের কারনেই।
এ জন্যেই আওয়ামী মন্ত্রীগণ জোড় গলায় বলে যে, তাদের নির্বাচন ঠেকায় কে?
আওয়ামী প্রশাসন ও বিচারকদের সাথে
নিয়েই শেখ হাসিনা তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেন।এবং ভারতকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে
জামায়াতের শীর্ষ আধ্যাত্বিক নেতাদের পাতানো আদালতে মিথ্যে স্বাক্ষী প্রমাণ দিয়ে শহীদ
করা হয় এবং অনেককে জেলখানায় বন্দী করে রাখা হয়।এখনো জামায়াত শিবিরকে দেখা মাত্র নির্বিচারে
গুলি করে শহীদ করা হচ্ছে। এবং অপহরণ, গুম, খুন তো নিত্য দিনের ব্যাপার।
শেখ হাসিনা, আওয়ামী প্রশাসন ও
আওয়ামী রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত চাকরিজীবি এবং তাদের সহযোগীতায় আওয়ামী নেতারা
বিএনপি জোট নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের প্রতি নিয়ত অপহরণ, গুম, খুন, সন্ত্রাস, হামলা
,মামলা, নৈরাজ্যসহ দেশের জনমনে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে যাচ্ছে।
আওয়ামী সরকারের ইসলাম বিরোধী
কর্মকান্ড রাষ্ট্রের প্রতিটি জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তার প্রতিবাদ স্বরুপ ২০১০ সালে
কওমী মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক সমর্থিত হেফাজতে ইসলামির সৃষ্টি হয়।হেফাজতের আমির আল্লামা
আহমেদ শফির নেতৃত্বে হেফাজতের নেতা কর্মীগণ ১৩ দফা দাবি নিয়ে ৫ মে ২০১৩ তারিখে ঢাকার
শাপলা চত্ত্বরে জমায়েত হয়।কিন্তু শেখ হাসিনার নির্দেশে ভারতীয় সৈন্যদের সমন্বয়ে গঠিত
আওয়ামী প্রশাসন শাপলা চত্ত্বর এলাকার বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে রাতের অন্ধকারে নিরস্ত্র
আলেমদেরকে নির্বিচারে গুলি করে কয়েকশ লোককে শহীদ করা হয়। ঐ রাতেই দমকল দিয়ে শাপলা চত্ত্বর
এলাকায় শহীদদের রক্ত ধুয়ে মছে পরিস্কার করাসহ অনেক শহীদদের লাশ গোপন আস্তানায় গুম করা
হয়। এসব খবর ইসলামিক টিভি ও দিগন্ত টিভি সরাসরি সম্প্রচার করতে ধরলে ঐ রাতেই শেখ হাসিনার
নির্দেশে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়।এর পর এপ্রিল ২০১৩-তে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা
করা হয়। এবং ৪ আগস্ট ২০১৬ তারিখে অনলাইন সংস্করণও বন্ধ করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা
নামে এক কালো আইন পাশ করে সকল মিডিয়ার স্বাধীনতা বন্ধ করে দিয়ে একদলীয় শাসননীতি প্রতিষ্ঠিত
করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকার ভালো করেই জানে
যে, বাংলাদেশে ইসলাম যদি প্রতিষ্ঠিত তাহলে এক মাত্র জামায়াত শিবিরের মাধ্যমেই হবে।
তাই তিনি জামায়াত শিবিরের মেরুদন্ড ভাংতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছেন।হাজার
হাজার জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীদের মিথ্যে মামলায় জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।ইতিমধ্যে
শতশত নেতা কর্মীদের শহীদ করা হয়েছে। সারা দেশের জামায়াত শিবিরের কার্যালয় বন্ধ করে
দেয়া হয়েছে। অনেক কার্যালয় আওয়ামীরা দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয় জামায়াত শিবিরের যতো
প্রতিষ্ঠান আছে তার সবই আওয়ামীরা ধ্বংস করে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকার ভাবছে জামায়াত শিবির আর সোজা
হয়ে দ্বাড়াতে পারবে না। আর আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে শক্ত বিরোধী সংগঠনও থাকছে না। বাংলাদেশে
হেফাজতে ইসলাম ছাড়া বাকি ইসলামি দলগুলোর আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে সমাবেশ বা মারমুখী আন্দোলন
করার সাহস নেই।চরমোনাই পির মাঝে মধ্যে আওয়ামীলীগের সমালোচনা করলেও পরোক্ষভাবে তারা
আওয়ামীলীগকেই সমর্থন করে।এছাড়া তাবলীগ জামায়াত, হিজবুত তাওহীদসহ ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ জালালী পার্টি,
আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ইসলামী
জোট-বিএনআইএ, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট, ইসলামিক
ডেমোক্রেটিক এ্যালায়েন্স (আইডিএ)এবং সকল পির মাশায়েখ, আউলিয়া তথা পির পুজারী ও
মাজার পুজারী সকলেই আওয়ামীলীগের সমর্থক।
আওয়ামী নেতারা নিশ্চিতভাবে জানে
যে, ৫ মে ২০১৩ তারিখে যেভাবে হেফাজতের আলেমদের শহীদ করা হয়েছে তারা আবার ১৩ দফা দাবী
নিয়ে মাঠে নামতে পারে।
এই আশংকায় তাবেদার উল্লেখিত ইসলামি
দলগুলোর মতোই হেফাজতকেও হাতের মুঠোয় আনার জন্যে আওয়ামীলিীগের পক্ষ থেকে এজেন্ট নিয়োগ
করা হয়।তারা প্রথমেই হেফাজতের আমির আল্লামা শফির ছেলে মাওলানা আনাস মাদানির
দুর্বল পয়েন্টে আঘাত
করে সে সময় আওয়ামীলীগের পক্ষে আনতে সক্ষম হয।এরপর আল্লামা শফিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা
শিক্ষাবোর্ড, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়া ইদগাহ মাঠের ইমাম
শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ ও ইসলামী ঐক্যজোটের
মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহসহ প্রমুখ আলেমদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়।কূটকৌশলী শেখ হাসিনা হেফাজতকে
হাতের মুঠোয় আনতে কওমী সনদকে স্নাতোকোত্তর এর সমমান প্রদান করেন।
শেখ
হাসিনা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ বেফাক-এর সভাপতি,
হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মুহতামিম ও হাইয়াতুল উলিয়ার চেয়ারম্যান
আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ আজ্ঞাবহ আলেমদের পিছনে কোটি কেটি টাকা ব্যয় করেন।
এই
আল্লামা শফির মুখ দিয়েই এক সময় বের হতো যে,শেখ হাসিনা মোনাফেক। পরবর্তীতে তার মুখ দিয়েই
বের হলো যে, শেখ হাসিনা পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তিনি খাঁটি মুসলমান। পরবর্তীতে তিনি
বিভিন্ন বৈঠকে আরো বলেন, আওয়ামীলীগ করলে দোষ নেই। আওয়ামীলীগের মধ্যে অনেক দ্বীনদার
ব্যক্তি আছেন। আমি কোরআন ও হাদিস দিয়ে প্রমাণ করে দিতে পারবো যে, যারা আওয়ামীলগি করে
তারা কখনই দ্বীনদার ব্যক্তি হতে পারে না। তারা কখনই খাঁটি ইমানদার মুসলমান নয়।আওয়ামী
মুসলমানরা ফাসেক, এরা মোনফেক, এরা জালেম, এরা কাফের। এদের স্থান হবে জাহান্নামের নিম্ন
স্তরে। এই সব কোরআন হাদিস আল্লামা শফিসহ আওয়ামী আলেমরা ভালোভাবেই জানেন। শুধু মাত্র
পার্থিব লোভের বশ:বর্তী হয়েই এসব ফাসেক আলেমরা কিারআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ
সহজ সরল মুসলমানদের এরা ইমান আমল নষ্ট করছে। এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ যে, তিনি
তার কূটনীতি বুদ্ধি দিয়ে আলেম সমাজের একটা বিরাট অংশকে তার পদ তলে আনতে সক্ষম হয়েছেন।শয়তান
আল্লাহর নিকট ওয়াদা করেছিল যে, আদম সন্তানের একটা অংশকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করবে।
তার বাস্তব উদাহরণ আমরা আওয়ামী মুসলমানদের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশে শংতান আসার
আর দরকার নেই। অলরেডি শয়তান তার অসংখ্য অনুসারী তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে।এসবের নেতৃত্ব
দিচ্ছে শেখ হাসিনা।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে
স্নাতকোত্তরের স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করায় বিগত ৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে রাজধানীর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল
জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ (হাইয়াতুল উলয়া) শুকরানা মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
উক্ত মাহফিলে সভাপতিত্ব
করেন,হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া
বাংলাদেশ বেফাক-এর সভাপতি, হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মুহতামিম ও হাইয়াতুল
উলিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফী।এবং প্রধান অতিথি ছিলেন স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা।
শোকরানা
মাহফিলে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া
বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা আহমদ শফিকে স্বাধীনতা পদক দেয়ার দাবি জানিয়েছেন
বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল
হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। এ ছাড়া মুফতি ফয়জুল্লাহ সাহেব অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সোহরাওয়ার্দীতে
প্রধানমন্ত্রীকে কওমিবাসীর জন্য মমতাময়ী জননী উপাধী দেন পরবর্তীতে গহরডাঙ্গার
রুহুল আমিন সাহেব শেখ হাসিনাকে কওমী জননী উপাধী প্রদান করেন।বাংলাদেশের চিহ্নিত বড়
বড় আলেমরা কিভাবে একটা নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী দলের পদ তলে পাথিব
লোভের বশবর্তী হয়ে মাথা অবনমিত করে, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে শোকরানা মাহফিল।
আওয়ামী আলেমগণ নিজেদেরেকে খাঁটি
মুসলমান দাবী করেন।তারা কালিমা পড়েন, নামাজ, রোজা, হজ্জ পালন করেন এবং যাকাতও প্রদান
করেন। লম্বা আল্লা খাল্লা জামা পড়েন। সব সময় টুপি পড়েন এবং লম্বা দাড়িও রাখেন। মসজিদের
ইমামতি করেন। কেহ মাদ্রাসা বা ভার্সিটিতে শিক্ষকতাও কওরন। এদের মধ্যে অনেকে কোরআন ও
হাদিসের হাফেজ্, কেহ মুফতি, কেহ মুহাদ্দিস, কেহ মুবাল্লিগ আবার কেহ খতিব । এই সব আলেমদের
মধ্যে অনেকে আবার পিরপন্থী, কেহ তাবলীগপন্থী। আবার অনেকে আছেন যারা ইসলামি দল গঠন করে
ইসলাম প্রচার করার দাবীও করেন। উল্লেখিত পর্যায়ের আলেমগণ কোরআন ও হাদিসে খুবই দক্ষ।
অথচ এই সব আলেমগন এমন একটি দলকে সমর্থন করে বা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে স্বাক্ষী রেখে সিল
মারে, যারা ক্ষমতায় গেলে কোরআন ও হাদিস বিরোধী আইন পাশ করে। মদের লাইসেন্স দেয়, দেহ
ব্যবসা বা পতিতা বৃত্তির লাইসেন্স দেয়। যারা মদ, জুয়া, লটারী, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি,
সন্ত্রাস, অপহরণ, গুম, খুনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। নারীর স্বাধীনতা ও নারীর ক্ষমতায়নের কথা
বলে সেই নারীদেরকেই উলঙ্গ করে নিয়ে বেড়াচ্ছে।অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা সমাজ ও রাষ্ট্রে
ছড়িয়ে দিচ্ছে। যেনা/ব্যভিচার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দুত্ববাদী
আদর্শ রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এমনি একটি দলের নেত্রী আপনার ভোটে নির্বাচিত হয়ে
এদেশের সহজ সরলমনা মুসলমানদেরকে ধোকা দেয়ার জন্যে কখনো নামাজ পড়ার দৃশ্য দেখায়, কখনো
কোরআন পড়ার দৃশ্য দেখায়, কখনো হাতে তসবিহ দেখা যায়। আবার সময় বুঝে মাথায় পট্টিও পড়ে।
এই নেত্রী আবার ভারতে গেলে রমজান মাসে কপালে সিঁদুর পড়ে মূর্তি পূজা করে এবং দুপুরে
রোজার দিনে ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে পাবদা মাছের ঝোল দিয়ে আহার করে।এই
নেত্রী সব সময় মা’ দূর্গার বন্দনা করে। এটা এমনি একটা দল যারা মুসলমান হয়ে নাস্তিক্যবাদে
বিশ্বাসী। যারা মানব রচিত আইনে রাষ্ট্র পরিচালনা করে থাকে। আর মুসলমানরা কোরআন-হাদিসে
দক্ষ হয়েও জেনে শুনে সেই দলকে ভোট দেয় বা সমর্থন করে। তাহলে উল্লেখিত মুসলমানরা কী
আসলেই মুসলমান।
শেখ হাসিনা তথা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের আদর্শ গ্রহণ বা আনুগত্য করা মুসলমানদের
জন্য হারাম:
আনুগত্য বিষয়ক
কোরআন ও হাদিস
১. আল্লাহ বলেন, তোমরা খোদাদ্রোহী
স্বেচ্ছাচারী তাগুতদের পরিহার করে এক আল্লাহর গোলামী বরন করে নাও্ (নাহল:৩৫)
২. যে লোক রাসুল (সাঃ)এর অনুসরন
করে চললো সে আল্লাহকে মেনে চললো।(নিসা:৮০)
৩. বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে
ভালবাস, তাহলে তোমরা আমাকে(রাসুলকে) অনুসরন করো, তাহলে আল্লাহ ও তোমাদের ভালবাসবেন।(ইমরান:৩১)
৪. হে ইমানদারগণ! আনুগত্য করো
আল্লাহর, অনুসারী হও তাঁর রাসুলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে (নির্ধারিত) রাষ্ট্র পরিচালকদেরকেও
মেনে চলো।(নিসা -৫৯)
৫. এমন কোন লোকের আনুগত্য করোনা
যার অন্তরে আমার (আল্লাহর) স্মরণ নেই এবং যে নিজের নফসের খায়েস লালসা ও বাসনা চারিতার্থ
করার পথ অবলম্বন করেছে এবং সীমালংঘন করাই যার অভ্যাস।(কাহাফ: ২৮)
৬. যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমালংঘন
করে তারাই পৃথিবীতে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে ,শান্তি শৃংখলা বিধানের কোন কাজ তারা
করে না, এ ধরনের নেতাদের নেতৃত্ব তোমরা আদৌ স্বীকার করবে না।( শুআরা:১৫২)
৭. হে ইমানদারগণ! তোমরা কাফিরদের
আনুগত্য করলে তারা তোমাদেরকে ইসলামের পথ থেকে ফিরিয়ে নেবে। অত:পর তোমরা ক্ষতি গ্রস্তদের
মধ্যে শামিল হয়ে যাবে। বরং আল্লাহই তোমাদের বন্ধু এবং তিনিই তোমাদের উত্তম সাহায্যকারী।
(ইমরান:১৪৯)
৮.মুমিনকে পরিত্যাগ করে কাফিরদের
সাথে মুমিনরা বন্ধুত্ব করে না। যারা এমন করবে আল্লাহর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
তবে তোমরা তাদের থেকে পরহেজ করে চলো্।(ইমরান:২৮)
৯. হে ইমানদারগণ! ইহুদী ও নাসারাদেরকে
বন্ধু রুপে গ্রহণ করো না্।এরা পরস্পরের বন্ধু্ । তোমাদের মধ্যে যারা এদের সাথে বন্ধুত্ব
রাখে তারা ওদের মধ্যে শামিল।(মায়িদা:৫১)
১০. হে মুমিনগন! তোমাদের দুশমন
ও আমার দুশমনদের সাথে তোমরা বন্ধুত্ব করো না। তোমরা এদের কাছে ভালবাসা প্রকাশ করো অথচ
যা কিছু সত্য তোমাদের কাছে এসেছে তা তারা অস্বীকার করে।(মুমতাহিনা:১)
১১. তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড়
শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অত:পর যারা মুশরিক তাদেরকে।(মায়িদাঢ়:৮২)
হাদিস:
১.আবু হোরায়রা (রাঃ) শুনেছেন,
নবি (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার অনুগত হয়েছে-আমার অনুসরন করে চলেছে ,সে আল্লাহর
অনুগত হয়েছে। তদ্রুপ যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করবে সে আল্লাহর নাফরমানী সাব্যস্ত হবে।আর
যে ব্যক্তি আমার অনুসারী বৈধ শাসনকর্তার অনুগত হয়েছে সে আমার অনুগত হয়েছে। আর যে ব্যক্তি
আমার অনুসারী বৈধ শাসনকর্তার নাফরমানী ও বিরোধীতা করবে সে আমার নাফরমানী ও বিরোধীতাকারী
সাব্যস্ত হবে।(বুখারী)
২. আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ)
হতে বর্নিত আছে, নবি (সাঃ) বলেছেন, মুসলমানদের কর্তব্য হল পছন্দনীয় অপছন্দনীয় সব বিষয়েই
শাসনকর্তার অনুসরন আনুগত্য,যাবতনা তাকে শরীয়ত বিরোধী কাজের আদেশ করা হয় সেক্ষেত্রে
মোটেই অনুসরন আনুগত্য নেই।(বুখারী)
৩. তাদের কেউ যদি কোন নাফরমানী
বা গোনাহের কাজের নির্দেশ দেয় তাহলে তা শোনাও যাবে না মানাও যাবে না।(হাদিস)
৪. আমাদের উপস্থাপিত ইসলামি জীবন
ব্যাবস্থায় যেকোন নতুন নিয়ম পদ্ধতি বা মতবাদের প্রচলন করবে ,যা তার সামগ্রিক প্রকৃতির
সাথে কিছু মাত্র খাপ খায় না, তা অবশ্যই প্রত্যাখান করতে হবে।(বুখারী ও মুসলিম)
৫. আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত
আছে, নবি (সাঃ) বলেছেন, অস্বীকারকারী ব্যতীত আমার উম্মতের সকলেই বেহেস্তে যেতে পারবে।
সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, অস্বীকারকারী কে? হযরত(সাঃ) উত্তরে বললেন, যে ব্যক্তি আমার
আনুগত্য অবলম্বন করে চলবে সে বেহেস্তে যাবে, আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করবে সে অস্বীকারকারী
সাব্যস্ত হবে।(বুখারী)
৬. ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় কোন
বিদআত, অনৈসলামিক রীতি পদ্ধতি প্রচলনকারীকে যে সম্মান প্রদর্শন করবে সে ইসলামের মূলোৎপাটনে
সাহায্য করলো।(বায়হাকী)
৭. আনুগত্য করা যাবে কেবল মাত্র
ন্যায় সংগত ও শরীয়ত সম্মত ব্যাপারে অন্য ক্ষেত্রে নয়।(বুখারী ও মুসলিম)
৮. হযরত আবু সাইদ খুদরী(রা:)নবি
করিম (সাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, নবি (সাঃ)বলেছেন, হে আমার উম্মত! তোমরা (তোমাদের মধ্য
হতে এক দল ভ্রান্ত লোক) তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের অবশ্যই অনুসরন করবে-বিঘতের সাথে
বিঘত মিলিয়ে আর হাতের সাথে হাত মিলিয়ে , অর্থাৎ সমান সমান তাদের কুসংস্কার মূলক আকিদা-বিশ্বাস
ও আচার-আচরনের পেছনে ধাবিত হবে। এমনকি তারা যদি গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করে থাকে, তবে
তোমরাও তাদের অনুসরন করতে গিয়ে গুই সাপের গর্তে প্রবেশ করবে। হযরত আবু সাইদ খুদরী(রা:)বলেন-
আমরা তখন প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ); আপনি পূর্ববর্তী বলতে ইহুদি ও নাসারাদের
কথা বলেছেন,নাকি? উত্তরে আল্লাহর রাসুল (সা:) বললেন, তবে আর কার কথা বলছি? তাদের কথাই
তো বলছি। আমার উম্মতের এক দল লোক ইহুদি নাসারাদের কুসংস্কারমূলক আকিদা-বিশ্বাস ও কর্মকান্ডে
লিপ্ত হবে।(বুখারী ২য় খন্ডপৃ: ১০৮৮)
৯. আমার পরে এমন সব লোক শাসন
ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে দেশ শাসন করতে থাকবে, যারা সুন্নত মিটিয়ে ফেলবে এবং বিদআত জারি
করবে। নামাজ ওয়াক্ত ছাড়া পিছিয়ে পড়বে। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি
যদি এমন শাসকদেরকে পাই তবে কি করবো? আল্লাহর রাসুল তখন জবাব দিলেন, “হে উম্মে আবদ!
যারা আল্লাহর নাফরমানী করবে তাদের আনুগত্য করা জায়েজ নেই”। হুজুর (সাঃ) এমনি তিন বার
বললেন। (হাদিস)
১০.যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করল, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য
করল। আর যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অবাধ্যতা করল, সে যেন আল্লাহরই অবাধ্যতা করল’।(বুখারীহা/৭২৮১)
১১. আবু সালাবা খাশানী, আবু উবায়দা, মুয়াজ (রা:) এই সাহাবীত্রয় রাসুল (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই দীন ইসলামের সূচনা নবুওয়ত ও রহমত দ্বারা হয়েছে। অতঃপর কিছু দিন খিলাফত ও রহমত থাকবে। এরপর খেলাফতের যুগ শেষ হয়ে যাবে এবং ধ্বংসকারী শাসন শুরু হবে।বিদ্রোহ, স্বৈরাচার, হিংস্বাত্বক ঘটনাবলী ও ফাসাদের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। মানুষ ব্যাভিচার,মদ্যপান ও রেশমী বস্তুকে হালাল মনে করে নিবে। এমতাবস্থায়ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য সমর্থন ও জীবিকার স্বচ্ছন্দতা অব্যাহত থাকবে। এমনি অবস্থায় তাদের মৃত্যু এসে যাব।(আবু দাউদ)
১১. আবু সালাবা খাশানী, আবু উবায়দা, মুয়াজ (রা:) এই সাহাবীত্রয় রাসুল (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই দীন ইসলামের সূচনা নবুওয়ত ও রহমত দ্বারা হয়েছে। অতঃপর কিছু দিন খিলাফত ও রহমত থাকবে। এরপর খেলাফতের যুগ শেষ হয়ে যাবে এবং ধ্বংসকারী শাসন শুরু হবে।বিদ্রোহ, স্বৈরাচার, হিংস্বাত্বক ঘটনাবলী ও ফাসাদের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। মানুষ ব্যাভিচার,মদ্যপান ও রেশমী বস্তুকে হালাল মনে করে নিবে। এমতাবস্থায়ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য সমর্থন ও জীবিকার স্বচ্ছন্দতা অব্যাহত থাকবে। এমনি অবস্থায় তাদের মৃত্যু এসে যাব।(আবু দাউদ)
আনুগত্য বিষয়ক কোরআন ও হাদিসে
যা বলা হয়েছে তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য আওয়ামীলীগকে বুঝানো হয়েছে। এরাই
হচ্ছে সেই শাসক দল যাদের কথা কোরআন ও হাদিসে বলা হয়েছে। আমরা মুসলমান জেনে শুনে তাদের
আনুগত্য করা ইসলামে নাজায়েজ তথা হারাম।
কোরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে এইসব
আওয়ামীলীগ সমর্থিত মুসলমানদের কোনো আমল আল্লাহর নিকট গৃহিত হবে না। এবং এদেরকে কঠিন
আজাবের দিকে ঠেলে দেয়া হবে।
কোরআন ও হাদিস ভিত্তিক দলীল:
১। হে নবি বলো, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না
কোন কোন লোক নিজেদের আমলের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ
ব্যর্থ? এরা
হচ্ছে ঐ সমস্ত লোক যারা ইহকালের জীবনে
ভ্রান্ত পথে চলে এবং মনে করে যে তারা ঠিক পথ ধরেই চলেছে। এরা তারাই, যারা তাদের প্রতিপালক প্রভুর
আয়াতগুলোকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তার দরবারে প্রত্যাবর্তনের প্রতি অবিশ্বাস
পোষন করে। এ জন্যে তাদের সকল আমল নষ্ট হয়ে
গেছে এবং কিয়ামতের দিন তাদের কোনই গুরত্ব থাকবে না। তারা
যে কুফরী করেছিলো আর আমার আয়াত ও রাসুলগণের প্রতি ঠাট্টা বিদ্রুপ
করতো তার প্রতি দানে তারা জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। (কাহাফঃ ১০৩-১০৫)
২। যারা তাঁর (রাসুলসঃ)
হুকুমের
বিরুদ্ধাচারন করে এ বিষয় তাদের সতর্ক থাকা একান্ত
কর্তব্য যে, তারা
মহাবিপদ গ্রস্ত হবে অথবা যন্ত্রনা দায়ক আযাব তাদেরকে পাকড়াও করবে।
(নূর-৬৩)
৩। আমাদের উপস্থাপিত ইসলামি জীবন
ব্যবস্থায় যে কোন নতুন নিয়ম পদ্ধতি বা মতবাদের প্রচলন করবে, যা তার সামগ্রিক প্রকৃতির সাথে
কিছু মাত্র খাপ খায় না, তা অবশ্যই
প্রত্যাখান করতে হবে।( বুখারী ও মুসলিম)
৪। সঠিক পথ প্রদর্শনের পরও যারা
বিশ্বাসীদের ব্যতীত অন্য কারও অনুকরন করে এবং মতানৈক্য
ও বিরোধিতা করছে আল্লাহর রাসুল
নবি করিম (সঃ) কে তবু তাদেরকে তিনি তার পছন্দ
মতো বিপথে চলতে দেবেন এবং জাহান্নামের অগ্নিতে জ্বালাবেন। (কোরআন-৪:১১৫)
৫।“ হোজায়ফা
(রাঃ) হতে বর্নিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, , মুসলিম সমাজে এমন লোকদের
আবির্ভাব হইবে যাহারা আমার নীতি ছাড়া অন্য নীতিও অবলম্বন করিবে। তাহাদের কোন কোন কাজ ভালো এবং
কোন কাজ মন্দও দেখিতে পাইবে।”(বুখারী)
৬। “যে ব্যক্তি নিজের মতবাদকে কেন্দ্র
করে তার নিয়ন্ত্রনে কোরআনের ব্যাখ্যা করে-যে ব্যক্তি কোরআনের নির্দেশ অনুসারে স্বীয় মতবাদ
স্থির করে না; বরং
স্বীয় মতবাদের নির্দেশ অনুসারে কোরআনের ব্যাখ্যা করে, শাব্দিক অর্থে ঐ ব্যাখ্যা শুদ্ধ
হলেও বস্তুত তা ভুল পরিগণিত।”(মেশকাত)
৭।“ তোমরা কি কোরআনের কোন কোন অংশ (আয়াত) মানো
আর কোন কোন অংশ মানো না? অত:পর যে ব্যক্তি তোমাদের মধ্য থেকে এরুপ কাজ করবে – পার্থিব জীবনে প্রকাশ্য লাঞ্চণা ভোগ করা আর
কিয়ামতের দিনে ভীষণ শাস্তির মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়া ছাড়া তার আর কী সাজা হতে পারে! আর আল্লাহ
তো তোমাদের কার্য কলাপ সম্বন্ধেবে- খবর নন। (বাকারা-৮৫)
৮।“ আনাস (রাঃ) হতেবর্নিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, এক দল লোক-যারা আমারই উম্মতের আকৃতি হবে, হাউজ কাউসারের কিনারায় আমার নিকট
আসবে।
এমনকি
আমি তাদেরকে আমার উম্মত রুপে চিনতে পারবো। এমতাবস্থায় আমার সন্নিকটে পৌঁছবার পূর্বেই
তাদের গতি জাহান্নামের দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তখন আমি বলবো , এরা তো আমার উম্মত। আল্লাহতায়ালা বলবেন আপনি জানেন
না, আপনার
দুনিয়া ত্যাগের পরে এরা (আপনার
তরিকা বা আদর্শ ছেড়ে অন্য)
কতো
রকম তরিকা ও অনুকরনীয় পন্থা গড়েছিলো।(বুখারী)
৯। “যে ব্যক্তি ইসলাম ( ইসলামি আ্ইন) ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন
(মানব
রচিত আইন)অবলম্বন করতে চাইবে, তার থেকে সে দ্বীন কবুল করা হবে না। আখেরাতে যারা মহা ক্ষতিগ্রস্ত, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
১০। নবি
করিম সা: ইরশাদ করেছেন: হযরত হারিসুল আশয়ারী (রঃ)হতে বর্ণিত। নবি করিম সা: ইরশাদ করেছেন,
আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি (১) জামায়াত বদ্ধ হবে (২) নেতার আদেশ মন
দিয়ে শুনবে (৩) তার আদেশ মেনে চলব (৪) আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ বর্জন করবে (৫) আর আল্লাহর
পথে জিহাদ করবে, যে ব্যক্তি ইসলামি সংগঠন ত্যাগ করে এক বিঘত দূরে সরে গেল, সে নিজের
গর্দান থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেলল, তবে সে যদি সংগঠনে প্রত্যাবর্তন করে তো স্বতন্ত্র
কথা। আর যে ব্যক্তি জাহিলিয়াতের নিয়ম নীতির দিকে (লোকদের) আহবান জানায় সে জাহান্নামী।
যদিও সে রোজা রাখে, নামাজ পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে।(মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)
লেখক : মাওলানা মো: শিহাব. এম এ-ইসলামিক স্টাডিজ ( বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ)
No comments:
Post a Comment