বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
ইসলামের পথে আহবান বা দাওয়াতী কাজ
বাংলাদেশে
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইহুদি, খৃস্টান,বৌদ্ধ ও হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী শেখ মুজিবি মুসলমানরা মুজিব ধর্ম প্রতিষ্ঠিত
করতে মোহাম্মদী ইসলামকে ধ্বংস করছে।
তাই
বাংলাদেশে
সাধারণ মুসলমানসহ জনগণকে ইসলামের পথে আহবান
বা ইসলামের দাওয়াত দেয়া প্রকৃত মুসলমানদের জন্য ফরজ-
লেখকঃ
মাওলানা মোঃ শিহাব,এম এ (বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ)
ইসলামের পথে আহবান বা ইসলামের
দাওয়াত দেয়া প্রকৃত মুসলমানদের জন্য ফরজ কিনা তা আমরা কোরআন ও হাদিস হতে জেনে নেই।
১.আপনি
আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন
হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা
এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ
দ্বারা এবং তাদের সাথে
উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন। (সূরা
নাহল: ১২৫)
২. হে রাসূল! আপনার
প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার
উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে
তা আপনি প্রচার করুন। যদি
আপনি তা না করেন
তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা
প্রচার করলেন না।
(সূরা মায়েদা : ৬৭)
৩. আর যেন তোমাদের
মধ্যে এমন একটি দল
হয়, যারা কল্যাণের প্রতি
আহবান করবে, ভাল কাজের
আদেশ দেবে এবং মন্দ
কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর
তারাই সফলকাম। (সূরা
আলে ইমরান: ১০৪)
৪. তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের)
জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা
ন্যায়কার্যে আদেশ এবং অন্যায়
কার্যে নিষেধ কর এবং
আল্লাহতে বিশ্বাস কর। (সূরা
আলে ইমরান: ১১০)
৫. তারা আল্লাহ ও
শেষ দিনের প্রতি ঈমান
রাখে এবং তারা ভাল
কাজের আদেশ দেয় ও
মন্দ কাজ থেকে নিষেধ
করে। আর
তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত
হয় এবং তারা নেককারদের
অন্তর্ভুক্ত। (সূরা
আলে ইমরান: ১১৪)
৬. আর মুমিন পুরুষ
ও মুমিন নারীরা একে
অপরের বন্ধু, তারা ভাল
কাজের আদেশ দেয় আর
অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ
করে, আর তারা সালাত
কায়েম করে, জাকাত প্রদান
করে এবং আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে
আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন,
নিশ্চয় আল্লাহ পরক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা
তাওবা: ৭১)
৭. ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা
কথায় কে উত্তম যে
আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান
করে, সৎকর্ম করে এবং
বলে, আমি তো মুসলিমদের
একজন। ( সূরা
ফুসসিলাত: ৩৩)
৮.আমি
কি তোমাদেরকে এমন একটি [লাভজনক]
ব্যবসার কথা বলব না!
যা তোমাদেরকে কঠিন পীড়াদায়ক আযাব
থেকে মুক্তি দিবে।
(সুরা আস-সফ ১০)
৯.হে
ঈমানদারগণ, আল্লাহ্ সাহায্যকারী হও [আহ্বান জানানোর
কাজে]। (সুরা
আস-সফ ঃ ১৪)
১০.তুমি
এদের স্পষ্ট বলে দাও
যে, এটাই আমার একমাত্র
পথ, যে আমি আল্লাহ্র দিকে আহ্বান
জানাই। (সুরা
ইউসুফ ঃ ১০৮)
১১.তুমি
এখন সে দীনের দিকে
দাওয়াত দাও। আর
তোমাকে যেমন হুকুম দেয়া
হয়েছে তার উপর মজবুতীর
সাথে থাক। (সুরা
আশ-শুরা ঃ ১৫
)
১২.আর
সেই ব্যক্তির কথা অপেক্ষা অধিক
ভাল কথা আর কার
হতে পারে ? যে মানুষকে
আল্লাহ্র দিকে ডাকে,
নেক আমল করে এবং
বলে আমি মুসলমান।
(সুরা হা-মীম আস
সাজদাহ: ৩৩ )
১৩.তোমাদের
মধ্যে এমন একদল লোক
অবশ্যই থাকতে হবে, যারা
মানব জাতিকে কল্যাণের পথে
আহ্বান জানাবে, সৎ কাজের আদেশ
দেবে আর অসৎ কাজে
বাধা দেবে, তারাই হলো
সফলকাম। (সুর
আল-ইমরান :১০৪)
১৪.এখন
তোমরাই দুনিয়ার সর্বোত্তম দল। তোমাদের
কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের
হেদায়াত ও সংস্কার সাধনের
জন্য, তোমরা নেকীর হুকুম
দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতী থেকে
বিরতি রাখো এবং আল্লাহ্র প্রতি ঈমান
আনো। ( সুরা
আল-ইমরান : ১১০
)
১৫.দীন
কায়েম কর এবং এ
ব্যাপারে মতভেদে লিপ্ত হয়ো
না। (সুরা
আশ-শুরা ঃ ১৩
)
১৬.তার
চেয়ে বড় জালেম আর
কে হতে পারে যে
আল্লাহ্র পক্ষ থেকে
পাওয়া সত্যকে গোপন রাখে। (সুরা
আল-বাকারাহ ঃ ১৪১ )
১৭.কালের
শপথ। নিশ্চয়
মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিতঃ
সেই লোকদের ছাড়া, যারা
ঈমান এনেছে ও নেক
আমল করেছে এবং একজন
অপরকে হক উপদেশ দিয়েছে
ও ধৈর্য ধারনের উৎসাহ
দিয়েছে। (সুরা
আল আসর ঃ ১-৪ )
১৮.আল্লাহ
বলেন:
আর
স্মরণ কর, যখন তাদের একদল
বলল, তোমরা কেন উপদেশ
দিচ্ছ এমন কওমকে, যাদেরকে
আল্লাহ ধ্বংস করবেন অথবা
কঠিন আজাব দেবেন ? তারা
বলল, তোমাদের রবের নিকট ওজর
পেশ করার উদ্দেশ্যে।
আর হয়তো তারা তাকওয়া
অবলম্বন করবে। অত:পর যে উপদেশ
তাদেরকে দেয়া হয়েছিল, যখন
তারা তা ভুলে গেল
তখন আমি মুক্তি দিলাম
তাদেরকে যারা মন্দ হতে
নিষেধ করে। আর
যারা জুলুম করেছে তাদেরকে
কঠিন আজাব দ্বারা পাকড়াও
করলাম। কারণ
তারা পাপাচার করত। (সূরা
আরাফ : ১৬৪-১৬৫)
হাদিস
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
الدِّيْنُ
النَّصِيْحَةُ، قُلْنَا لِمَنْ قَالَ
للهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلِأئمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتهِمْ. (رواه مسلم)
দীন
হলো নসিহত। সাহাবিগণ
বললেন, কার জন্য ? বললেন,
আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের
জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, মুসলিমগণের
নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ
মুসলিমদের জন্য। (মুসলিম)
২. আল্লাহ তায়ালা বলেন:
যাদেরকে
আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলে বা
ক্ষমতাবান করলে তারা সালাত
কায়েম করে, জাকাত দেয়,
সৎকার্যে নির্দেশ দেয় এবং অসৎকার্যে
নিষেধ করে। আর
সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর
এখতিয়ারে। (সূরা
হজ্জ : ৪১)
৩.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
ألا
كُلُّكُمْ راعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ
عَنْ رَعِيَّتِهِ فَالامَامُ (الاميرُ) الَّذِي على النَّاس
رَاعٍ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ
رَعِيَّتِهِ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلى أهْلِ
بَيْتِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ
رَعِيَّتِهِ وَالْمَرْأةُ رَاعِيَةٌ عَلى أهْلِ بَيْتِ
زَوْجِهَا وولَدِهِ وَهِيَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ
(رواه البخاري ومسلم)
সাবধান!
তোমরা সকলেই অভিভাবকত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত
এবং প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করা হবে।
মানুষদের উপর দায়িত্বপ্রাপ্ত শাসক
বা প্রশাসক, অভিভাবক এবং তাকে তার
অধীনস্ত জনগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা
করা হবে। বাড়ির
কর্তাব্যক্তি তার পরিবারের সদস্যদের
দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিভাবক এবং তাকে তাদের
বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।
স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ি
ও তার সন্তান-সন্ততির
দায়িত্বপ্রাপ্তা এবং তাকে তাদের
বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।
(বোখারি ও মুসলিম)।
৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
مَنْ
رأي منْكُمْ مُنْكَرًا فلْيُغَيِّرْهُ
بِيَدِهِ فَانْ لَمْ يَسْتَطِعْ
فَبِلِسَانِهِ فَانْ لَمْ يَسْتِطِعْ
فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أضْعَفُ الْايْمَانِ (رواه
مسلم)
তোমাদের
কেউ যদি কোনো অন্যায়
দেখতে পায় তবে সে
তাকে তার বাহুবল দিয়ে
প্রতিহত করবে। যদি
তাতে সক্ষম না হয়
তবে সে তার বক্তব্যের
মাধ্যমে (প্রতিবাদ) তা পরিবর্তন করবে। এতেও
যদি সক্ষম না হয়
তা হলে অন্তর দিয়ে
তার পরিবর্তন (কামনা ) করবে। আর
এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম
পর্যায়। (মুসলিম)।
৫. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
وَاللهِ
لأنْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلاً
وَاحِدًا خَيرٌ لَكَ مِنْ
أنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ
النَّعْمِ (رواه البخاري ومسلم)
আল্লাহর
কসম, তোমার মাধ্যমে যদি
একজন মানুষকেও আল্লাহ সুপথ দেখান
তাহলে তা তোমার জন্য
(সর্বোচ্চ সম্পদ) লাল উটের
মালিক হওয়ার চেয়েও উত্তম
বলে গণ্য হবে।
(বোখারি ও মুসলিম)।
৬. أمْرُ بِالمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ
وَنَهيٌ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ
(رواه مسلم)
ভাল
কার্যে নির্দেশ করা সদকা বলে
গণ্য এবং খারাপ থেকে
নিষেধ করা সদকা বলে
গণ্য। (মুসলিম)।
৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
مَنْ
دَعَا إلى هُدًى كَانَ
لَهُ مِنَ الْاجْرِ مِثْلُ
أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لا
يَنْقُصً ذلِكَ مِنْ أُجُرِهِمْ
شَيئاً وَمَنْ دَعَا إلى
ضَلَالَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ
الْاثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ
تَبِعَهُ لايَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ
شَيئًا. (رواه مسلم)
যদি
কোনো ব্যক্তি কোনো ভাল পথে
আহবান করে, তবে যত
মানুষ তার অনুসরণ করবে
তাদের সকলের পুরস্কারের সমপরিমাণ
পুরস্কার সে ব্যক্তি লাভ
করবে, তবে এতে অনুসরণকারীদের
পুরস্কারের কোনো ঘাটতি হবে
না। আর
যদি কোনো ব্যক্তি কোনো
বিভ্রান্তির দিকে আহবান করে
তবে যত মানুষ তার
অনুসরণ করবে তাদের সকলের
পাপের সমপরিমাণ পাপ সে ব্যক্তি
লাভ করবে, তবে এতে
অনুসরণকারীদের পাপের কোনো ঘাটতি
হবে না। (মুসলিম)।
৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ
করেছেন:
مَنْ
دَلَّ عَلى خَيْرٍ فَلَهُ
مِثْلُ أجْرِ فَاعِلِهِ (رواه
مسلم)
যদি
কেউ কোনো ভাল কর্মের
দিকে নির্দেশনা প্রদান করে তবে
তিনি কর্মটি পালনকারীর সমপরিমাণ
সাওয়াব লাভ করবেন।
(মুসলিম)।
৯. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
إنَّ
النَّاسَ إذَا رأوا الْمُنْكَرَ
لا يُغَيِّرُونَهُ أوشَكَ أنْ يَعُمَّهُمُ
اللهُ بعقَابِهِ (رواه الترمذي و
ابوداود وابن ماجه واحمد
بسند صحيح)
যখন
মানুষেরা অন্যায় দেখেও তা পরিবর্তন
বা সংশোধন করবে না
তখন যে কোন মুহূর্তে
আল্লাহর শাস্তি তাদের সবাইকে
গ্রাস করবে। (তিরমিজি,
আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ,
মুসনাদে আহমাদ। সনদ
সহিহ)
১০. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ
করেন:
مَا
مِنْ رَجُلٍ يَكُونُ في
قَوْمٍ يَعْمَلُ فِيهِمْ بِالْمَعَاصِى يَقْدِرُونَ
على أنْ يُغَيِّرُوا عَلَيْهِ
فَلَا يُغَيِّرُواإلَّا أصَابَهُمُ اللهُ بِعَذَابٍ مِنْ
قَبْلِ أنْ يَمُوتُوا.(رواه
ابوداود حسن)
কোনো
সমাজের মধ্যে যদি কোনো
ব্যক্তি অবস্থান করে সেখানে অন্যায়
পাপে লিপ্ত থাকে এবং
সে সমাজের মানুষেরা তার
সংশোধন-পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকা
সত্ত্বেও তা না করে,
তবে তাদের মৃত্যুর পূর্বেই
আল্লাহর আজাব তাদেরকে গ্রাস
করবে। (আবু
দাউদ, হাদিসটি হাসান)।
১১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
وَالذي
نَفْسِى بِيَدِهِ لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ أوْ
لَيُوشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَبْعَثَ
عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِنْهُ ثُمَّ تَدْعُونَهُ
فَلَا يُسْتَجَابُ لَكُمْ (رواه الترمذي
حسن)
যার
হাতে আমার জীবন, তাঁর
শপথ! তোমরা অবশ্যই কল্যাণের
আদেশ করবে এবং মন্দ
থেকে নিষেধ করবে, তা
না হলে আল্লাহ অচিরেই
তোমাদের সবার উপর তাঁর
গজব ও শাস্তি পাঠাবেন,
তারপর তোমরা আল্লাহকে ডাকবে,
কিন্তু তোমাদের ডাকে সাড়া দেওয়া
হবে না বা তোমাদের
দোয়া কবুল করা হবে
না। (তিরমিজি,
হাসান সূত্রে)
১২. মহান আল্লাহর কসম
করে বলছি, তোমরা অবশ্যই
সৎ কর্মের আদেশ করবে,
অন্যায় থেকে নিষেধ করবে,
অন্যায়কারী বা অত্যাচারীকে হাত
ধরে বাধা দান করবে,
তাকে সঠিক পথে ফিরে
আসতে বাধ্য করবে।
যদি তোমরা তা না
কর তবে আল্লাহ তোমাদের
মধ্যে পরস্পর বিরোধিতা ও
শত্রুতা সৃষ্টি করে দিবেন
এবং তোমাদেরকে অভিশপ্ত করবেন যেমন ইসরাঈল
সন্তানদেরকে অভিশপ্ত করেছিলেন। ( আবু
দাউদ ও অন্যান্য ।
১৩. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
إنَّهُ
يُسْتَعْمَلُ عَلَيْكُمْ أُمَرَاءُ فَتَعْرِفُونَ وَتُنْكِرُونَ فَمَنْ كَرِهَ فَقَدْ
بَرِئَ وَمَنْ أَنْكَرَ فَقَدْ
سَلِمَ وَلَكِنْ مَنْ رَضِيَ وَتَابَعَ
قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ
ألا نُقَاتِلُهُمْ قَالَ لا مَا
صَلَّوا(رواه مسلم)
অচিরেই
তোমাদের উপর অনেক শাসক-প্রশাসক আসবে যারা ন্যায়
ও অন্যায় উভয় প্রকারের কাজ
করবে। যে
ব্যক্তি তাদের অন্যায়কে ঘৃণা
করবে সে অন্যায়ের অপরাধ
থেকে মুক্ত হবে আর
যে ব্যক্তি আপত্তি করবে সে
(আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে) নিরাপত্তা পাবে। কিন্তু
যে এ সকল অন্যায়
কাজ মেনে নেবে বা
তাদের অনুসরণ করবে (সে
বাঁচতে পারবে না) সাহাবিগণ
বললেন, হে আল্লাহর রাসূল,
আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করব না? তিনি
বললেন, না, যতক্ষণ তারা
সালাত আদায় করবে।
(মুসলিম)।
১৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
إذَا
عُمِلَتِ الْخَطيئَةُ في الْارضِ كَانَ
مَنْ شَهِدَهَا فَكَرِهَهَا وَ قَالَ مَرَّةً
أنْكَرَهَا كَانَ كَمَنْ غَابَ
عَنْها وَمَنْ غَابَ عَنْهَا
فَرَضِيَهَا كَانَ كَمَنْ شَهِدَهَا
(رواه ابو داود)
যখন
পৃথিবীতে কোনো পাপ সংঘটিত
হয় তখন পাপের নিকট
উপস্থিত থেকেও যদি কেউ
তা ঘৃণা করে বা
আপত্তি করে তবে সে
ব্যক্তি অনুপস্থিত ব্যক্তির মত পাপ মুক্ত
থাকবে। আর
যদি কেউ অনুপস্থিত থেকেও
পাপটির বিষয়ে সন্তুষ্ট থাকে
বা মেনে নেয় তাহলে
সে তাতে উপস্থিত থাকার
পাপে পাপী হবে।
(আবু দাউদ। সনদ
গ্রহণযোগ্য)।
১৫. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
لا
تَقِْفَنَّ عِنْدَ رَجُلٍ يُقْتَلُ
فَإنَّ اللعْنَةَ تَنْزِلُ عَلى مَنْ حَضَرَهُ
حِيْنَ لَمْ يَدْفَعُوا عَنْهُ
ولا تَقِْفَنَّ عِنْدَ رَجُلٍ يُضْرَبُ
مَظْلُومًا فَإنَّ اللعْنَةَ تَنْزِلُ
عَلى مَنْ حَضَرَهُ (رواه
أحمد وطبراني وبيهقي . وحسنه
العراقي في تخريج إحياء
علوم الدين)
যেখানে
কোনো মানুষকে হত্যা করা হয়
সেখানে কখনই দাঁড়াবে না,
কারণ সেখানে উপস্থিত লোকেরা
যদি তার হত্যা প্রতিরোধ
না করে তাহলে সকলের
উপর লানত ও অভিশাপ
বর্ষিত হয়। আর
যেখানে কোনো মানুষকে অত্যাচার
করে মারধর করা হয়
সেখানে দাঁড়াবে না। কারণ,
উপস্থিত সকলের উপরেই লানত-অভিশাপ বর্ষিত হয়। (আহমাদ,
তাবারানি, বাইহাকি। বাইহাকির
সনদটি হাসান বলে ইরাকি
এহইয়াউ উলুমিদ্দীনের তাখরিজে উল্লেখ
১৬. لا يَحْقِرَنَّ أحَدُكُمْ
نَفْسَهُ أنْ يَرَى أَمْرَ
اللهِ عَلَيْهِ فِيْهِ مَقَالاً ثُمَّ
لا يَقُوْلُهُ فَيَقُولُ اللهُ مَا مَنَعَكَ
أنْ تَقُولَ فِيهِ فَيَقُولُ
رَبِّ خَشِيتُ النَّاسَ فَيَقُولُ
وأنَا أحَقُّ أنْ يُخْشىَ
(رواه أحمد. وسنده صحيح)
তোমাদের
কেউ যেন নিজেকে ছোট
মনে না করে।
সে যদি দেখে যে
কোথাও কোনো বিষয়ে আল্লাহর
পক্ষ থেকে তার কোনো
কথা বলা উচিত তখন
যেন সে কথা বলা
থেকে বিরত না থাকে। তাহলে
আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি
এ বিষয়ে কেন কথা
বলনি? সে বলবে, হে
আল্লাহ! আমি মানুষদেরকে ভয়
পেয়েছিলাম। তখন
তিনি বলবেন, আমার অধিকারই
তো বেশি ছিল যে,
তুমি আমাকেই বেশি ভয়
করবে। (আহমাদ,
সনদ সহিহ)
১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
يُجَاءُ
بِالرَّجُلِ يَومَ القِيَامَةِ فَيُلْقَي
فِي النّارِ فَتَنْدَلِقُ اَقْتَابُهُ
فِي النَّارِ فَيَدُورُ كَمَا يَدُورُ الْحِمَارُ
بِرَحَاهُ فَيَجْتَمِعُ أهْلُ النَّارِ عَلَيْهِ
فَيَقُولُونَ أي فُلانٌ مَا
شأنُكَ أَلَيْسَ كُنْتَ تأمُرُنَا بِالْمَعْرُوفِ
وَتَنْهَانَا
عَنِ
الْمُنْكَرِ قَالَ كُنْتُ آمُرُكُمْ
بِالْمَعْرُوفِ ولا آتِيْهِ وَأنْهَاكُمْ
عَنِ الْمُنْكَرِ وَ آتِيْهِ (رواه
البخاري)
কেয়ামতের
দিন এক ব্যক্তিকে আনায়ন
করে জাহান্নামের অগ্নির মধ্যে নিক্ষেপ
করা হবে। আগুনে
তার নাড়িভুড়ি বেরিয়ে পড়বে এবং গাধা
যেমন যাতা (ঘানি) নিয়ে
ঘুরে তেমনি সে ঘুরতে
থাকবে। তখন
জাহান্নামবাসীরা তার নিকট সমবেত
হয়ে বলবে, হে অমুক,
তোমার কি হল? তুমি
না আমাদেরকে সৎকার্যে আদেশ দিতে এবং
অসৎকার্য থেকে নিষেধ করতে?
সে বলবে আমি তোমাদেরকে
সৎকার্যে আদেশ দিতাম কিন্তু
নিজে করতাম না।
আর অসৎকার্য থেকে নিষেধ করতাম,
কিন্তু নিজেই তা করতাম। (বুখারি)
মুসলমানদের সংবিধান ও আইনী গ্রন্থ হচ্ছে আল কোরআন। নতুন করে কোন আইন তৈরী
করা যাবে না। কিন্তু আওয়ামীলীগ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নতুন করে সংধিান ও আইন তৈরী
করে যাচ্ছে। তারা কোরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক সমাজ ও রাস্ট্র পরিচালনা করছে না।এ জন্যে
আপনি মুসলমান হয়ে আওয়ামীলীগকে সমর্থন করা কিংবা তাদের আনুগত্য করা এক জন মুসলমানের
জন্যে হারাম,শিরক ও কুফরী।
এর পরেও যদি আপনি তাদের আনুগত্য করেন তাহলে আপনার কোন আমল কিয়ামতে আল্লাহর
নিকট গ্রহন যোগ্য হবে না।
কোরআন হতে দলীলঃ
১।“তোমরা কি কোরআনের কোন কোন অংশ (আয়াত) মানো আর কোন কোন অংশ মানো না?
অত:পর যে ব্যক্তি তোমাদের মধ্য থেকে এরুপ কাজ করবে – পার্থিব জীবনে প্রকাশ্য লাঞ্চণা
ভোগ করা আর কিয়ামতের দিনে ভীষণ শাস্তির মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়া ছাড়া তার আর কী সাজা হতে
পারে! আর আল্লাহ তো তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে বে-খবর নন।”(বাকারা-৮৫)
এ আয়াতে কোরানের সকল নীতিকে মেনে
নিতে বলা হয়েছে।
২।আল্লাহ আরো বলেন“হেমুমিনগণ, ইসলামে পুরোপুরি প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ
করো না। নিশ্চিত জেন,
সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”(সুরা বাকারা, আয়াত
: ২০৮)
৩।আরো বলেছেন,“যে
ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন অবলম্বন করতে চাইবে, তার থেকে সেদ্বীন কবুল করা হবে না। আখেরাতে
যারা মহাক্ষতিগ্রস্ত, সে তাদের
অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
৪।সুরা আল-ইমরানের
১০২নং আয়াতে বলা হয়েছে ‘‘তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না’’।
৫।আল্লাহ আরো বলেন,“হে নবি বলো, আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না কোন্
কোন্ লোক নিজেদের আমলের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ? এরা হচ্ছে ঐ সমস্ত লোক যারা ইহ কালের জীবনে ভ্রান্ত পথে চলে এবং মনে করে
যে তারা ঠিক পথ ধরেই চলেছে। এরা তারাই, যারা তাদের প্রতিপালক প্রভুর আয়াতগুলোকে মেনে
নিতে অস্বীকার করেছে এবং তার দরবারে প্রত্যাবর্তনের প্রতি অবিশ্বাস পোষন করে। এ জন্যে
তাদের সকল আমল নষ্ট হয়ে গেছে এবং কিয়ামতের দিন তাদের কোনই গুরত্ব থাকবে না।তারা যে
কুফরী করেছিলো আর আমার আয়াত ও রাসুলগণের প্রতি ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো তার প্রতিদানে তারা
জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।”(কাহাফঃ ১০৩-১০৫)
৬।“সঠিক পথ প্রদর্শনের পরও যারা
বিশ্বাসীদের ব্যতীত অন্য কারও অনুকরন করে এবং মতানৈক্য ও বিরোধিতা করছে আল্লাহর রাসুল
নবি করিম (সঃ) কে তবু তাদেরকে তিনি তার পছন্দ মতো বিপথে চলতে দেবেন এবং জাহান্নামের
অগ্নিতে জ্বালাবেন।”(কোরআন-৪:১১৫)
৭।“যারা তাঁর (রাসুল সঃ) হুকুমের
বিরুদ্ধাচারন করে এ বিষয় তাদের সতর্ক থাকা একান্ত কর্তব্য যে, তারা মহা বিপদগ্রস্ত
হবে অথবা যন্ত্রনাদায়ক আযাব তাদেরকে পাকড়াও করবে।”(নূর-৬৩)
হাদিস হতে দলিল
“ আনাস (রাঃ) হতে বর্নিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, এক দল লোক-যারা
আমারই উম্মতের আকৃতি হবে, হাউজ কাউসারের কিনারায় আমার নিকটআসবে।এমন কি আমি তাদেরকে
আমার উম্মত রুপে চিনতে পারবো। এমতাবস্থায় আমার সন্নিকটে পৌঁছবারপূর্বেই তাদের গতি জাহান্নামের
দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তখন আমি বলবো,এরা তো আমার উম্মত। আল্লাহ তায়ালা বলবেন আপনি জানেন
না, আপনার দুনিয়া ত্যাগের পরে এরা (আপনার তরিকা বা আদর্শ ছেড়ে অন্য) কতো রকম তরিকা বা দল ও অনুকরনীয় পন্থা গড়েছিলো।(বুখারী)
নবি (সঃ) আরো বলেন,
“আমাদের উপস্থাপিত ইসলামি জীবন
ব্যবস্থায় যে কোন নতুন নিয়ম পদ্ধতি বা মতবাদের প্রচলন করবে,যা তার সামগ্রিক প্রকৃতির
সাথে কিছু মাত্র খাপ খায় না, তা অবশ্যই প্রত্যাখান করতে হবে।”(বুখারী ও মুসলিম)

একটি
কুপের মধ্যে একটি বিড়াল পড়ে মারা গেলো।কুপের পানি দুর্গন্ধময় হলো। জনগন বালতি বালতি
পানি তুলে ফেলতে লাগলো।কিন্তু পানির দুর্গন্ধ গেলো না। পানির দুর্গন্ধ চলে যাবে তখনই
যখন মৃত বিড়ালটি কুপ থেকে তুলে ফেলা হবে। তেমনি আমাদের এই সমাজটি অপসংস্কৃতি আর পাপাকার্যে
পঁচে দুর্গন্ধময় হয়েছে।সমাজ থেকে এই দুর্গন্ধ দূর করতে হলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে
ইসলামি আইন।মূলত নবি করিম (সঃ)কে আল্লাহ তায়ালা এই দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন শুধু এই কাজটি
করার জন্যই আর তিনি তা বাস্তবায়ন করে গেছেন।আমরা মুসলমান এই পথেই চলবো।
আওয়ামী
মুসলিমরা বলে বেড়ায় যে, এখন কেনো ইসলামের দাওয়াত? আসলে এরা যদি প্রকৃত মুসলমান হতো
তাহলে এসব কথা বলতো না।ইসলামের পথে আহবান কিয়ামত পর্যন্ত চলবে।বর্তমানে শেখ হাসিনারা
বাংলাদেশে বিভিন্ন কৌশলে ইসলামকে ধ্বংস করে যাচ্ছে।দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটিয়েছে।সামান্যতম
ইমান আমল নিয়ে বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।আমাদের এখনই সময় জিহাদে ঝাপিয়ে পড়া।ইসলামি
আন্দোলনের অনেকে মনে করেন যে, ভোট বা গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলাম কায়েম করা সময়ের ব্যাপার।
তাই তারা বিভিন্ন নামে সংগঠন তৈরী করে ইসলাম কায়েমে বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
যাদেরকে ইহুদি,খৃস্টান ও মুরতাদরা জঙ্গি নাম দিয়েছে। আসলে জঙ্গি অর্থ যোদ্ধা।সেই অর্থে
সকল সৈনিকরাও জঙ্গি।জঙ্গি কোন খারাপ শব্দ নয়। এটা পবিত্র শব্দ।
সকল
মুসলমান ভাই বোনদের আহবান করছি, এখনই সময় যুদ্ধে যাওয়ার। বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম করতে
ইসলামের পথে আহবান করবো,যদি বাঁধা আসে তাহলে জিহাদ করবো।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বাংলাদেশে
ইসলাম কায়েম করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
No comments:
Post a Comment